
বার্তা পরিবেশক ::
কক্সবাজারের উখিয়ায় ২৭, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নানান আনুষ্ঠানিকতায় প্রয়াত: রেবতপ্রিয় মহাথের’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয়গুরুর নানান কর্মসূচীতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে সম্পন্ন করতে জেলা, উপজেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যরা কার্যকর ভুমিকা রাখছে।
২৯ ডিসেম্বর পূণ্যময় এ অনুষ্ঠানের আর্শীবাদক বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু মহামান্য সংঘরাজ ধর্মসেন মহাথের। সভাপতিত্ব করবেন উপ-সংঘরাজ ও একুশে পদকপ্রাপ্ত ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের। প্রধান সদ্ধর্মদেশক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাথের। উদ্বোধক ওয়াট থাই জ্ঞানবিরিয় অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানলংকার মহাথের। প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা- সাংসদ আবদুর রহমান বদি। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে- সাংসদ সাইমুন সরওয়ার কমল, প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী কমরেড দিলীপ বড়–য়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়–য়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি অজিত রঞ্জন বড়–য়া সহ দেশ-বিদেশের প্রাজ্ঞ ভিক্ষুসংঘ ও বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। এতে সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ভদন্ত কুশলায়ন মহাথের।
উল্লেখ্য ভদন্ত রেবতপ্রিয় মহাথের’র (গৃহীনাম- আনন্দ রতœ বড়ুয়া)। তথ্যমতে, ১০ জুলাই ১৯৪৯ সালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রতœাপালং ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত বৌদ্ধ পরিবারে জন্মজাত সন্তান তিনি। প্রয়াত: ভদন্ত রেবতপ্রিয় মহাথের সম্পর্কে সিএসবি ২৪ ডটকম সম্পাদক পলাশ বড়–য়া’র জেঠা হয়।
কোটবাজারস্থ সাতবাড়িয়া পাড়ার প্রয়াত: মাষ্টার ক্ষিরোদ চন্দ্র বড়–য়া ও প্রয়াত: সুভদ্রা বালা বড়ুয়া’র সংসারে ১০ ছেলে-মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন ৪র্থ সন্তান। ক্রমান্বয়ে সন্তানরা হলেন, মনিকুমতলা বড়ুয়া, পারুলী বড়ুয়া, জিনরতœ বড়ুয়া, আনন্দরতœ বড়ুয়া (রেবতপ্রিয় মহাথের), বিরালা বড়ুয়া, স্বর্ণরতœ বড়ুয়া, পূর্ণিমা বড়ুয়া, মুলিকা বড়ুয়া, বোধিরতœ বড়ুয়া, জ্যোতিরতœ বড়ুয়া।
অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় আনন্দ রতেœর চিত্তে বৈরাগ্যভাব উৎপন্ন হয়। তৎকালীন সমাজ সংস্কারক, আবাল্য ব্রহ্মচারী, পন্ডিত প্রয়াত: শাসনবংশ মহাথের’র নিকট শ্রামণ্য ধর্মে দীক্ষিত হয়ে পালি ও ধর্মীয় শিক্ষায় অধ্যয়ন করেন।
১৯৭১সালে একই গুরুর সান্নিধ্যে অপরাপর সংঘের উপস্থিতিতে তিনি উপসম্পদা গ্রহণ করে দীর্ঘ ৪৬ বৎসর ধর্ম প্রচার করেন। ভিক্ষু জীবনে তিনি নানান সাংগঠনিক দায়িত্বপালন সহ অবহেলিত এই সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমানেও তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্যরা এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। সংসারধর্মে আবদ্ধ না হলেও গৃহীজীবনের অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রয়েছে তাঁর ।
চলতি ২০১৭ সালে ১৩ মার্চ (সোমবার) বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬৮ বৎসর বয়সে তিনি পরলোকগমণ করেন। ১৬ মার্চ নানান আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তাঁর মৃতদেহ পেটিকাবদ্ধ করে সংরক্ষণ করা হয়। উল্লেখ্য মৃত্যুকালীন তিনি উখিয়া ভিক্ষু সমিতির সভাপতি এবং পাতাবাড়ী আনন্দ ভবন বিহারের অধ্যক্ষ হিসেবে আসীন ছিলেন।
পাঠকের মতামত